মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৬:৩১ অপরাহ্ন
উত্তরবঙ্গ ডেস্ক :
রাজশাহীতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত আশি বছর বয়সী এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। এই প্রথম রাজশাহীতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কোনো রোগীর মৃত্যু হলো। রাজশাহী সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় আজ রোববার (২৬ এপ্রিল) সকাল সাতটার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক সাইফুল ফেরদৌস ও করোনাভাইরাস চিকিৎসকের প্রধান ডা. আজিজুল হক আযাদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
ওই রোগীর নাম সোবাহান আলী (৮০)। তিনি বাঘা উপজেলার গাওপাড়ার মৃত শহীদ আলীর ছেলে।
ডা. আজিজুল হক আযাদ জানায়, করোনা আক্রান্ত হয়ে আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেন। করোনা আক্রান্ত এই রোগীর শ্বাসকষ্ট ছিল। গত কয়েকদিন আগে তার অবস্থার অবনতি ঘটে। আজ সকাল ৭ টা ৪০ মিনিটে তার মৃত্যু হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) কর্তৃক নির্দেশিত উপায়ে তার মরদেহ দাফনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ জন্য কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনকে খবর দেওয়া হয়েছে বলেও জানান ডা. আজিজুল হক আযাদ।
জানতে চাইলে, ডা. আজিজুল হক আযাদ বলেন, এই নিয়ে রাজশাহীতে করোনা শনাক্ত আটজন রোগীর মধ্যে আজ প্রথম কারো মৃত্যু হলো। গত ১২ এপ্রিল থেকে সর্বশেষ গত সোমবার (২০ এপ্রিল) পর্যন্ত রাজশাহীতে মোট আটজনের করোনা শনাক্ত হয়।
বাঘা উপজেলার এই বৃদ্ধের করোনা শনাক্ত হয় গত ২০ এপ্রিল। বাকি সাতজনের বাড়ি রাজশাহীর পুঠিয়া, বাগমারা, মোহনপুর ও বাঘা উপজেলায় ।
এদের মধ্যে সাতজনই ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর থেকে এসেছেন। কিন্তু বাঘা আক্রান্ত এই ব্যক্তির কোন সে ধরণের কোনো ভ্রমণ ইতিহাস ছিলনা।
বর্তমানে করোনা আক্রান্ত অন্য সাতজন নিজ বাড়িতেই আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের অবস্থা স্থিতিশীল। মহানগরীতে এখনও করোনা আক্রান্ত কোনো রোগী শনাক্ত হননি।
জ্বর ও প্রস্রাবের সমস্যার কথা বলে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (রামেক) এসেছিলেন রাজশাহীর বাঘা উপজেলার ৮০ বছর বয়সী এই বৃদ্ধ। গত ১৭ এপ্রিল তিনি প্রথমে হাসপাতালে আউটডোর ইউনিটে চিকিৎসার জন্য আসেন। পরে হাসপাতালের ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে তাকে ভর্তি করা হয়।
শারীরিক সমস্যা অনুযায়ী সেখানে তাকে সেখানে চিকিৎসা দেওয়া হয়। তবে পরে তাকে এক্স-রে করানো হলে করোনার কিছু উপসর্গ দেখতে পান চিকিৎসকরা। করোনা আক্রান্ত সন্দেহ হওয়ায় সাধারণ ওয়ার্ড থেকে করোনা ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয় তাকে।
এরপর গত ২০ এপ্রিল তার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করলে তার শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। সাধারণ ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্স ও অন্য রোগীসহ অনেকেই তার সংস্পর্শে আসেন।
নমুনা পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর হাসপাতালে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এবার ওই রোগীর স্ত্রী ও ছেলের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে দেখা হয়। তবে তাদের ফালাফল নেগেটিভ আসে।
এরপর কোনো ধরনের সুরক্ষা পোশাক ছাড়াই তার সংস্পর্শে এসেছিলেন এমন ৪২ জন চিকিৎসক-নার্স ও কর্মচারীকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়।
পরে জানা যায়, কোয়ারেন্টিনে পাঠানো রামেক হাসপাতালের ৪২ চিকিৎসক-নার্স ও কর্মচারী করোনায় আক্রান্ত নন।
গত ২২ এপ্রিল ও গত ২৩ এপ্রিল রামেকের ল্যাবে তাদের সংগ্রহকৃত নমুনা পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু এই দুইদিনে হাতে আসা তাদের রিপোর্টে ফলাফল নেগেটিভ আসে। এদের মধ্যে ২১ জন চিকিৎসক, ১২ জন নার্স ও ৯ জন সহায়ক কর্মচারী।
সূত্র : প্রথম আলো ও সিল্কসিটি নিউজ
Leave a Reply