শনিবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৩, ১১:৩৭ অপরাহ্ন
শহিদুল ইসলাম
করোনা সংকটে পৃথিবী নানা ভাবেই বদলে যাবে, এটা নিশ্চিত। পরিবর্তন আসবে পেশায়, চাকরিতে, জীবন-জীবিকায়। পরিবর্তন আসবে প্রকৃতি-পরিবেশে। পরিবর্তন হচ্ছে এবং হবে রাষ্ট্রনীতি, আইন-কানুন, বিজ্ঞান, সামাজিক সম্পর্ক এবং শিক্ষা সাংস্কৃতিসহ সবকিছুতেই। পরিবর্তন অবসম্ভাবী। পৃথিবী নতুন আরেক চরিত্র নিয়ে এগুবে আরেক যুগের পথে।
পৃথিবীর এই নতুন যাত্রায় মানুষ টিকে থাকার অবস্থা যে কঠিন মনে হচ্ছে তা স্পষ্ট।এখানো জানিনা আমরা কতোটা স্বাধীন আর আগের মতো চলতে পরবো। কোন কিছুই জানিনা। শুধু জানি একটা নিশ্চিত পরিবর্তন হচ্ছে। এই পরিবর্তনে নয়া কিছু পরিকল্পনাও ভেস্তে যেতে পারে। অসার হতে পারে আগের অনেক নেয়া বড় বড় পরিকল্পনা।
তবে জীবন আর জীবিকার দিকটিই এখন অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ। খাদ্য , চিকিৎসা নিয়ে ভাবতে হবে অনেক বেশী করে। সব থেকে বেশী। আর শিক্ষা বলতে প্রকৃতির শিক্ষা, বিজ্ঞানের শিক্ষা, মানবতার শিক্ষা, বেঁচে থাকার শিক্ষাকেই বেশী প্রাধান্য দিতে হবে।তাই সরকার, প্রতিষ্ঠান, উন্নয়ন সংস্থা সবাইকে একযোগে এই দিকটাই বেশী ভাবতে হবে। পরিকল্পনা করতে হবে।
করোনা সংকটে কেটেছে প্রায় ৬ মাস। বিশ্ব এখানো কোন নিশ্চিত চিকিৎসা আবিষ্কার করতে পারেনি। জানিনা কতোটা পেরে উঠবে মানব সমাজ তাকে রক্ষা করতে। বিশ্বে একযোগে কখনোই এরকম মহামারি কখনোই হয়নি।
এই বিষয়টিও ভাবার। ভাবতে হবে। শুধু দোষারোপ আর নিজেকে রক্ষার চিন্তা ডিনয়ে এগুলে আরেক মহাভূলে পরে যাবো আমরা। পরে যাবে প্রতিটি রাষ্ট্র। চাই সমন্বিত উদ্যোগ, সমন্বিত ভাবনা, কর্ম কাজ। দেশের আগের যতো পরিকল্পনা আছে তা নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। করোনা পরবর্তীে বিশ্বে, করোনা পরবর্তীদেশে এই পরিকল্পনা কতোটুকু কাজে লাগবে তা নিয়ে এখনই গবেষণা শুরু করা দরকার।
বিশ্লেষন করা দরকার। খুব জরুরী হয়ে পড়েছে এটা । পরিকল্পনার অভাবে অনেক মানুষ ক্ষতি হবে। তাই পরিকল্পনা জরুরী। চাকরি হারিয়েছে যারা, যাদের হারাবে, তাদের কি হবে। যাদের চাষের জমি নেই , তাদের কি হবে। ছোট ব্যবসায়ীর কি হবে। সবকিছু। সবকিছু। এসব নিয়ে ভাবতে হবে।
শুরু করতে হবে। শুধু ত্রাণ দেয়া নেয়া আর ত্রাণের হিসেবে থাকলে হবেনা। পরিকল্পনা আর উচ্চ পর্যায়ে এসব শুরু করতে হবে এখনই। সময় নেই। তানা হলে অন্যরকম সংকট দেখতে হবে। যা কল্পানাও করেনি পৃথিবীর শাসক গোষ্ঠী। মানুষ বেঁচে থাকার জন্য সবকিছু করবে।
তাই বেঁচে থাকার জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা জরুরী। করোনা পরবর্তী প্রকৃতিতে হাজারো ধরনের বিলুপ্ত সব প্রাণের পূর্ণজন্ম হবে, বিবর্তণ হবে। জানিনা সেগুলো মানুষের জন্য কতোটা সুখের হবে নাকি আরো সংকট বাড়িয়ে দেবে। জানিনা । কিছুই জানিনা। শুধু জানি পরিবর্তন হবে।
এটা নিশ্চিত পরিবর্তন হবে অনেক কিছুতেই। তাই দেশের ভিতরের সবকিছুকে নিয়ে একটা পরিকল্পনা করতে হবে। বিদেশনীতি, বিদেশ নির্ভরতা সবকিছু বদলে যাবে। ১৮ কোটির জনসংখ্যার এই দেশে সব স্তরের মানুষগুলোকে নিয়ে রাষ্ট্রের পরিকল্পনা করা দরকার। এখনই তা শুরু করা দরকার। করোনা পরবর্তী বা করোনাকালের রাষ্ট্র পরিকল্পনা সেল তৈরী করুণ। শুরু করতে হবে এই কাজ।
লেখক : উন্নয়নকর্মী ও গবেষক
Leave a Reply