রবিবার, ২৬ মার্চ ২০২৩, ১১:৫২ পূর্বাহ্ন
শিক্ষাঙ্গন প্রতিবেদক :
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান রাসেল মারা গেছেন। ইন্না…রাজিউন। সোমবার (০৪ মে) দিবাগত রাতে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৩৬ বছর।
মঙ্গলবার (০৫ মে) বাদ জোহর নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার সুলতানপুরে জানাজা শেষে তার দাফন কার্য সম্পন্ন হয়েছে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, মাহবুবুর রহমান রাসেল গত ২১ সেপ্টেম্বর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে গুরুতর অসুস্থ হন। এরপর তিনি দীর্ঘদিন ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। কয়েক মাস আগে তাঁকে ভারতেও চিকিৎসা করানো হয়। এরপর দেশে আনা হয়। তিনি ঢাকার বাসাবোতে বোনের বাসায় ছিলেন।
সোমবার (০৪ মে) রাতে তিনি আবারো গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থা সংকটাপন্ন থাকায় সেখান থেকে তাকে আরেকটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। পথেই তিনি মারা যান।
ড. রাসেলের এই মৃত্যুতে রাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বিভাগের শিক্ষকরা জানিয়েছেন, ড. রাসেলের দেশের বাড়ি নোয়াখালি। পারিবারিক জীবনে একটি শিশুকন্যা রয়েছে। তার স্ত্রীও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক।
অধ্যাপক ড. রাসেলের মৃত্যুতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে রাবির সহযোগী অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান রাসেলের সহকর্মী রাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ড. সাজ্জাদ বকুল লিখেছেন, (যা লিখেছেন, তা হুবুহ তুলে ধরা হলো) “আমরা অত্যন্ত বেদনার সাথে জানাচ্ছি যে, আমাদের সহকর্মী ড. মাহাবুবুর রহমান রাসেল (৩৭) ইন্তেকাল করেছেন। গতকাল ৪ মে দিবাগত রাতে ঢাকার বাসাবো এলাকায় বোনের বাসায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। আল্লাহ রাসেলকে জান্নাতবাসী করুন। আমিন। তাঁর গ্রামের বাড়ি নোয়খালীর বেগমগঞ্জে দাফনের উদ্দেশে তাঁর পরিবারের সদস্যরা মরদেহ নিয়ে নোয়াখালীর উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছেন। সেখানেই জানাজা শেষে তাঁর দাফন হবে। প্রসঙ্গত, রাসেল (সহযোগী অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, রা. বি.) গত ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে গুরুতর অসুস্থ হন। এরপর তিনি দীর্ঘদিন ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। কয়েক মাস আগে তাঁকে ভারতেও চিকিৎসা করানো হয়।”
এদিকে সাংবাদিক অঙ্গনেও ড. রাসেলের মৃত্যুতে শোক নেমে এসেছে। রাজশাহীতে কর্মরত ইত্তেফাক পত্রিকার সাংবাদিক মোঃ আনিসুজ্জামান ফেসবুকে শোকপ্রকাশ করে লিখেছেন, (যা লিখেছেন, তা হুবুহ তুলে ধরা হলো) “সকালে ঘুম থেকে জেগেই দুঃসংবাদ পেলাম। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মাহাবুবুর রহমান রাসেল ভাই আর নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর তিনি ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। অত্যন্ত মেধাবী এবং এই ছবিটির মতই হাসিখুশি ও সুন্দর মনের মানুষ ছিলেন তিনি। আমাকে সর্বদা ভাই বলে সম্মোধন করতেন। হে আল্লাহ রাসেল ভাইকে জান্নাতুল ফেরদাউস দান করুন, ছুম্মা আমিন।”
রাজশাহীতে কর্মরত এসএ টিভির রাজশাহী ব্যুরো প্রধান জিয়াউল গনি সেলিম ফেসবুকে লিখেছেন, (যা লিখেছেন, তা হুবুহ তুলে ধরা হলো) “সকালে ঘুম থেকে জেগেই দুঃসংবাদটা বুকের মধ্যে বিঁধে আছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক মাহাবুবুর রহমান রাসেল আর নেই। গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর তিনি ব্রেন স্ট্রোক করেন। ঠিক এই ছবিটির মতই হাসিখুশি ও সুন্দর মনের ছিলেন। রাসেল ভাই ও আমি একই হলে থাকতাম ছাত্রজীবনে। অনেক স্মৃতি তার সাথে। আজ সব কিছুই হারিয়ে গেল…”
দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকার রাজশাহীর স্টাফ রিপোর্টার মামুন-অর-রশীদ ড. রাসেলের সাথে তোলা একটা সেলফি সহ ফেসবুকে একটি পোষ্ট করেছেন। পোষ্টে তিনি লিখেছেন, (যা লিখেছেন, তা হুবুহ তুলে ধরা হলো) “….ওপারে ভালো থাকুন রাসেল ভাই …তিনবছর আগের ছবিটা দুদিন আগে ভেসে আসলো আমার ফেসবুক মেমোরী হয়ে। আমার তোলা সেলফিতে সদা হাস্যজ্বল মানুষগুলোর মধ্যে একজন রাবির গণযোগযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের মেধাবী শিক্ষক মাহবুবুর রহমান রাসেল। খুব কাছের মানুষ ছিলেন। মেমোরী হয়ে ফিরে আসার দিন খুব মিস করছিলাম রাসেল ভাইকে, শেয়ারও দিয়েছিলাম গরংং ণড়ঁ জধংবষ ঠযধর লিখে। আজ সকালেই তার না ফেরার দেশে চলে যাওয়ার খবরে মনটা খুব খারাপ হয়ে গেলো। রাসেল ভাই যেদিন হঠাৎ অসুস্থ্য হয়ে অচেতন হন ঠিক তার আগের দিন ক্যাম্পাসেই তারসঙ্গে শেষ দেখা হয়েছিলো। আর কোনোদিন দেখা হবে না। ওপারে ভালো থাকুন রাসেল ভাই।”
এছাড়াও তার শিক্ষার্থী, সহকর্মী ও পরিচিতজনেরা নানা ধরণের পোষ্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখে শোক প্রকাশ করছেন।
Leave a Reply